২০২৩ সালে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে তুরস্ক
প্রবাস ডেস্ক : তুরস্কের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের তৃতীয় চুল্লির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে বুধবার (১০ মার্চ)।দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভিডিও কনফারেন্সে তুরস্কের দক্ষিণ উপকূলীয় শহর মের্সিনে প্রথম আক্কুয়ু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (এনজিএস) তৃতীয় চুল্লির ভিত্তি স্থাপন করেন।
আশা করা হচ্ছে, এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম চুল্লি তুর্কি প্রজাতন্ত্রের শতবর্ষ ২০২৩ সালে এবং অবশিষ্ট চুল্লিগুলো ২০২৬ সালে কার্যকর হবে। আক্কুয়ু চতুর্থ চুল্লিটিও আগামী বছর ভিত্তি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
দুই দেশ ২০১০ সালে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। তার আট বছর পরে আক্কয়ু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি পরিচালনা করছে রাশিয়ার শক্তি সংস্থা রোসাটম।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘এটি আমাদের প্রজাতন্ত্রের ১০০তম বছরে তুরস্ককে পারমাণবিক বিদ্যুৎসম্পন্ন দেশগুলোর তালিকায় যুক্ত করবে।’ এটিকে ‘তুর্কি-রাশিয়ার সহযোগিতার প্রতীক’ হিসেবে সম্বোধন করেন তিনি।
মস্কো থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রেসিডেন্ট রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি এটিকে ‘সত্যিকারের ফ্ল্যাগশিপ প্রজেক্ট’ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমাদের যৌথ প্রকল্প আক্কয়ু এনজিএসে নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে।’
তুরস্কের জ্বালানিমন্ত্রী ফাতিহ ডানমেজ বলেছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি তুরস্কের প্রায় মোট বিদ্যুৎ সরবরাহের ১০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করবে।
আক্কয়ু মোট ইনস্টলড বিদ্যুৎ থাকবে ৪,৮০০ মেগাওয়াট। এটি বার্ষিক ৩৫ বিলিয়ন কিলোওয়াট ঘণ্টা (কেডব্লুএইচ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অনেকগুলি সহায়ক খাতে অবদান রাখবে। আমাদের লক্ষ্য পারমাণবিক শক্তি যুক্ত করা, যা শক্তি উপাদন করার সময় শূন্য নির্গমনের (মহা আকাশ যাত্রা) সাথে কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, এটি নির্মাণের ব্যস্ততম সময়ে ১৬ হাজার এবং উৎপাদনকালীন ৪ হাজার লোকের জন্য কর্মসংস্থান দেবে। তার ৮০ শতাংশ তুর্কি হবে। সত্যিকার অর্থে, আমাদের ১৮৬ জন শিক্ষার্থী প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হয়ে ৬ বছরের প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে আসে। এভাবে তুরস্কের পারমাণবিক শক্তি একটি দল গঠন করা হবে এবং আমাদের জাতীয় জ্বালানি সংহতকরণের জন্য নতুন নতুন নিয়োগের সুযোগ পাবে।
বর্তমানে রাশিয়ায় ১০০ জনেরও বেশি তুর্কি শিক্ষার্থী এ বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তুরস্কের মোট ৪৬৮ শিক্ষার্থীকে পারমাণবিক বিষয় বাইরে পড়াশোনা করানো হবে বলে জানা গেছে।
তুরস্কের জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী ফাতিহ ডানমেজ এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (রোজাটম) আলেক্সি লিখাচেভ, তারা দুই প্রেসিডেন্ট অনুমতি ক্রমে বোতাম টিপে এই ভিত্তি স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠান শেষে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমার প্রিয় বন্ধুর (পুতিনকে লক্ষ্য করে) সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হবে।
উল্লেখ্য, তুর্কি বিশেষজ্ঞরা পড়াশোনা শেষ করে রোসাটমের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর আক্কয়ু এনজিএস অপারেটিং কর্মীদের দলে অন্তর্ভুক্ত হবেন।