হুমকিতে পড়েছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ !
১ min read
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে মাত্রই গতি ফিরতে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বাড়ছে পণ্যের চাহিদা। অথচ এর মধ্যেই বিশ্বব্যাপী চিপ সংকট তৈরি হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদন।
এ সংকটের পেছনে কারণ রয়েছে বেশ কয়েকটি। শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে চীনা টেক জায়ান্ট হুয়াওয়ের ব্যাপক কেনাকাটা, জাপানের একটি চিপ কারখানায় অগ্নিকাণ্ড, করোনাভাইরাস মহামারিতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় লকডাউন, ফ্রান্সে ধর্মঘটের মতো ঘটনাগুলো এমন অভূতপূর্ব চিপ সংকট তৈরি করেছে।
এর পেছনে আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, বিনিয়োগে ঘাটতি। আট ইঞ্চি চিপ প্রস্তুতকারী কারখানাগুলোর বেশিরভাগই এশিয়ায়। তাদের চিপের চাহিদা ধারণাতীত বাড়লেও সেই তুলনায় বিনিয়োগ আসেনি।
শেনঝেন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্যান্ড অ্যান্ড ওয়েভের প্রধান নির্বাহী ডনি ঝ্যাং বলেন, গোটা ইলেকট্রনিকস শিল্পেই আমরা উপকরণ ঘাটতি অনুভব করছি।
ডনি একটি স্মার্ট হেডফোন নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু সেটি তৈরিতে আবশ্যক মাইক্রোকন্ট্রোলার ইউনিট পেতে বিলম্বের বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি।
ডনি ঝ্যাং বলেন, আমরা এক মাসের মধ্যে উৎপাদন শেষ করার পরিকল্পনা করছিলাম। কিন্তু এখন দুই মাস লাগবে মনে হচ্ছে।
জাপানি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ চিপ ঘাটতির মুখে পড়েছে। এগুলো পেতে ১০ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারির আঘাত সামলে চীনে দ্রুত বাড়ছে পণ্যের চাহিদা। বিশেষ করে গাড়ির চাহিদা বেড়েছে অপ্রত্যাশিত গতিতে। উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে ল্যাপটপ-স্মার্টফোনেরও।
তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির গাড়িনির্মাণ শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী বছরের প্রথম তিন মাস পর্যন্ত কয়েকটি চীনা প্রতিষ্ঠান উৎপাদন সংকটে ভুগতে পারে।
গত মাসে গাড়ির চিপ সরবারাহকারী প্রতিষ্ঠান এনএক্সপি সেমিকন্ডাক্টরস ঘোষণা দিয়েছে, আনুষঙ্গিক উপাদানের মূল্য বৃদ্ধি এবং চিপ সংকটের কারণে তাদের সব পণ্যের দাম বাড়াতে হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কার্ট সিয়েভারস বলেন, আমরা যা আশা করেছিলাম তার চেয়ে দ্রুত ব্যবসা ফিরেছে। অনেক ক্রেতা দেরিতে অর্ডার করেছেন। ফলে কিছু ক্ষেত্রে আমরা তাল মেলাতে পারছি না।
বিশ্লেষকরা চিপ সংকটের অন্যতম কারণ হিসেবে হুয়াওয়ের ব্যাপক পণ্য মজুতকে দায়ী করেছেন। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে ভবিষ্যৎ সংকট এড়াতে তারা বিপুল পরিমাণ চিপ মজুত করে। এর সঙ্গে যোগ দেয় তাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাওমি। হুয়াওয়ের নিষেধাজ্ঞার সুযোগে বাজার ধরতে তারাও পণ্যের অর্ডার বাড়িয়ে দেয়।
চিন্তা আরও বেড়ে যায় ফ্রান্সের চিপ নির্মাতা এসটিমাইক্রোইলেকট্রনিকসে শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হলে। এর কারণে চিপ উৎপাদন অন্তত আট শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছেন এক ফরাসি শ্রমিক নেতা।