রিভিউ বিদ্যার জনক আতিক্যাস্টটল!
১ min read
উচ্চ মাধ্যমিকে রসায়নবিদ্যার টিএনটি-বেনজিনের ছকে পড়ে বিস্ফোরিত হয়নি, কিংবা নাক সিটকে কেঁচো-তেলাপোকা ঘেটে জীববিদ্যায় প্রানিবিদ হয়নি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেহাত কম নয়; যদি এবং কেবল যদি সে কিনা উচ্চতর গণিত বিধৌত বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়ে থাকে, তবে তাদের দিয়েই তো শুরু হয়েছিল আসাদুল্লাহ আতিকের বুক রিভিউ উপাখ্যানের প্রথমাংশ!
এরপর তো বইয়ের গন্ডি ছাড়িয়ে হলের ভুলে ফেলে যাওয়া বিস্কিট থেকে শুরু করে ফেসবুকে লাইক-কমেন্টের বন্যা পূর্ববর্তী-পরবর্তী এবং বন্যাকালীন ব্যবস্থা নিয়ে যাবতীয় পরামর্শ; আতিক হয়ে গেলো ‘আতিক ভাই’ তথা ‘জাতীয় ভাই’। ইনবক্স আর কমেন্টে আতিক নিজেই যেন রিভিউ প্রসঙ্গের অনুরোধের জলোচ্ছ্বাস সামাল দিতে হিমশিম খেতে লাগলো। এরপর একে একে ফুটবল, ক্রিকেট, লুডু, জিলাপি, জ্যামিতিবক্স, ব্যাকবেঞ্চার সহ শিক্ষাব্যবস্থার পর্যন্ত রিভিউ দিয়ে আতিক হয়ে গেল আধুনিক যুগের এরিস্টটল।
বাস্তবে প্রাণখোলা হাসিমুখের আতিককে ভারচুয়ালি দেখতে গেলে কপালের কোচকানো ভাজ গুনতে গিয়ে অধৈর্য্য হয়ে যেতে পারেন আপনি। তবে সেই ভাজেই যেন লুকিয়ে আছে অজস্র মানুষের গালে টোল পড়ানো হাসির অস্ত্র। ঢাকাতে সাভারের স্থায়ী বাসিন্দা আতিকের জন্ম মূলত শরীয়তপুরে, আর মায়ের সরকারী চাকরির সুবাদে অন্তত ৭ বিদ্যালয়ের বারান্দা পেরিয়েছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংএ স্নাতকোত্তর শেষ করা আসাদউল্লাহ আতিক।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় দাঁত ভাঙা সব টার্মের সাথে বহুল পরিচিত আতিক সকলের নিকট এই কঠিন বিষয়গুলোকেই মজাদার উপস্থাপনে সহজ করতে চেয়েছেন। ‘আতিক ভাই’ পেইজের ৩য় রিভিউ হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক রসায়নের বইয়ের রিভিউ দিয়ে হাস্যরসের খোরাক জোগাতে গিয়েই আতিক ভাইরাল হয়ে যায় মহূর্তে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। রিকশাতে, কিংবা লেগুনাতে, অথবা বাসের জালনাতে; “ভাই ম্যাথের রিভিউ কবে আসবে”, “ভাই রসায়নের রিভিউটা সেরা ছিল”; আতিকের সাথে ‘ভাই’ শব্দটাও জুড়ে দিল লাখো তরুনের টাইমলাইনের বারান্দাতে একট করে জায়গা করে নেয়া আতিক।
হলের পুরনো চুন-সুরকি খসে পড়া দেয়ালের ব্যাকগ্রাউন্ড আর কোচকানো কপাল গুরুগম্ভীর মুখ নিয়ে রিভিউ দিতে বসা সাড়ে ৩ লাখ ফলোয়ারের পথে হাঁটা ’আতিক ভাই’ তরুন প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে; মানুষকে হাসাতে একেবারেই সরল সোজা উপস্থাপনই যথেষ্ট, যেখানে সেখানে নেচে গেয়ে অসুস্থ বিনোদন একেবারেই নিষ্প্রয়োজন।